বাংলাদেশের বনজ সম্পদ

 বাংলাদেশের বনজ সম্পদ




বাংলাদেশের বনজ সম্পদ দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বনজ সম্পদ বলতে বোঝায় এমন সব প্রাকৃতিক সম্পদ যা বন থেকে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কাঠ, বাঁশ, মধু, গাছের রজন, ঔষধি গাছপালা এবং বনজ প্রাণী রয়েছে। 


বাংলাদেশের বনভূমি ও এর ধরন:

বাংলাদেশে প্রধানত তিন ধরনের বন পাওয়া যায়:

1. চিরহরিৎ বন: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। এখানে মহীরুহ গাছ যেমন গর্জন, চাপালিশ, সেগুন, জাম, কড়ই ইত্যাদি পাওয়া যায়।

2. সুন্দরবন (ম্যানগ্রোভ বন): বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবস্থিত। এই বন বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, কুমির, মাছ ও অন্যান্য প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। 

3. শাল বন: দেশের মধ্যাঞ্চল, বিশেষ করে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও মধুপুর এলাকায় পাওয়া যায়। শাল গাছ এখানে প্রধান বনজ সম্পদ।


 বনজ সম্পদের গুরুত্ব:

1. অর্থনৈতিক মূল্য: বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠ, বাঁশ, চামড়া, মধু ইত্যাদি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে অর্থনৈতিক মূল্য সৃষ্টি করে।

2. পরিবেশগত ভূমিকা: বনজ সম্পদ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, মাটির ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়) থেকে সুরক্ষা দেয়।

3. জীববৈচিত্র্য রক্ষা: বাংলাদেশের বনাঞ্চল বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল।

4. কার্বন সঞ্চয়: বন গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

বন সংরক্ষণ ও সমস্যা:

বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। মানুষের বসতি স্থাপন, কৃষি জমি তৈরি, কাঠ আহরণ ও বন ধ্বংসের কারণে বনজ সম্পদের ওপর চাপ বাড়ছে। তবে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বন সংরক্ষণ এবং পুনরায় বনায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। 


বনজ সম্পদের টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব।



See More.............

Post a Comment

0 Comments