মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী জীবনী
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানী (১৮৮০ - ১৯৭৬) ছিলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি রাজনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং গণআন্দোলনের নেতা। তাকে সাধারণত "মজলুম জননেতা" হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন এবং উপমহাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
মাওলানা ভাষানীর জন্ম ১২ ডিসেম্বর, ১৮৮০ সালে ব্রিটিশ ভারতের আসাম প্রদেশের ধুবড়ি জেলায়। তার পিতা হাজী শরফত আলী খান ছিলেন একজন মধ্যবিত্ত কৃষক। শৈশবেই তিনি ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ইসলামিক ধর্মগুরু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
ভাষানীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে। তিনি ১৯১৭ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন এবং খান আব্দুল গফফার খানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। পরে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ১৯৪০ সালের দশকের দিকে তিনি বাংলার মুসলিমদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন।
তেভাগা আন্দোলন
১৯৪৬ সালে মাওলানা ভাষানী তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভূমিহীন কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং জমির উপর তাদের স্বত্ব নিশ্চিত করা। তার এই আন্দোলন ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং বাংলার কৃষকদের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা
১৯৪৯ সালে মাওলানা ভাষানী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ হিসেবে পরিচিত হয়। এই দলটি পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম করে।
ভাষানী ও স্বাধীনতা সংগ্রাম
মাওলানা ভাষানী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি বাঙালির মুক্তির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যান। তবে, স্বাধীনতার পর তিনি রাজনীতি থেকে ক্রমশ দূরে সরে যান।
মৃত্যু
মাওলানা ভাষানী ১৭ নভেম্বর, ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে পুরো বাঙালি জাতি একজন মহান নেতাকে হারায়। আজও তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় এবং তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হন।
.jpg)
.jpg)

0 Comments