গ্রামীন ব্যাংক এর ইতিহাস
গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোক্রেডিট বা ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, যা গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। এই ব্যাংকটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর উদ্যোগে গ্রামীণ ব্যাংক তৈরি হয়েছে একটি ভিন্নধর্মী আর্থিক মডেল হিসেবে, যার মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্র মানুষ, বিশেষ করে নারীরা, ঋণ গ্রহণের সুযোগ পান। এর লক্ষ্য ছিল দরিদ্রদের জীবিকা উন্নয়ন এবং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট:
১৯৭৪ সালের বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের সময়ে, ড. ইউনূস লক্ষ্য করেন যে ছোট ঋণের কারণে দরিদ্র মানুষদের জীবনযাত্রা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক থাকা অবস্থায়, স্থানীয় গ্রামে একটি প্রকল্প শুরু করেন যেখানে তিনি নিজের অর্থে গরীব মানুষকে ঋণ প্রদান করেন। এই প্রকল্পের সাফল্যের পর, তিনি বুঝতে পারেন যে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে দরিদ্র মানুষদের দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা সম্ভব।
গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য:
১৯৮৩ সালে সরকারি অনুমোদনের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি গ্রামীণ ব্যাংক নামে প্রতিষ্ঠা পায়। এর ঋণগ্রহীতারা প্রায় ৯৭% নারী। ব্যাংকটি সাধারণত জমি বা অন্য কোনও মূল্যবান জামানত ছাড়াই ঋণ প্রদান করে এবং দরিদ্রদের সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরিতে সহায়তা করে। এটি একটি নতুন ধারার মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করে।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি:
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এই পুরস্কার তাঁদের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়ার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয়।
গ্রামীণ ব্যাংক শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে। এর মডেল অনুসরণ করে বিভিন্ন দেশে মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটেছে।

.jpg)
.jpg)

0 Comments