ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য
ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হলো উপকূলবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা বিশেষ ধরনের একটি বনভূমি, যা লবণাক্ত পানি ও বন্যার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম উদ্ভিদের সমন্বয়ে গঠিত। এই বনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:
1. লবণ সহিষ্ণুতা: ম্যানগ্রোভের গাছগুলো লবণাক্ত পানিতে বেড়ে ওঠে এবং বিশেষ শ্বাসমূলের মাধ্যমে অতিরিক্ত লবণকে ছেঁকে বের করে।
2. শ্বাসমূল (Pneumatophores): ম্যানগ্রোভ গাছের শিকড় মাটির উপরে বেড়ে ওঠে। এগুলো গাছকে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং পানির নিচে শ্বাস নিতে সাহায্য করে।
3. জলজ ও ভূমিজ পরিবেশের মিশ্রণ: ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল জল ও স্থলের সংযোগস্থলে থাকে, যেখানে মিঠা ও লবণাক্ত পানির মিশ্রণ থাকে।
4. জলোচ্ছ্বাস ও ঝড় প্রতিরোধ: ম্যানগ্রোভ বন প্রাকৃতিকভাবে ঢাল হিসেবে কাজ করে, যা উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ও বন্যার ক্ষতি থেকে।
5. বায়োডাইভারসিটি বা জীববৈচিত্র্য: ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল অনেক প্রজাতির মাছ, কাঁকড়া, শামুক ও অন্যান্য প্রাণীর আবাসস্থল, যা সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সমৃদ্ধ করে।
6. মাটির ক্ষয় প্রতিরোধ: এই বনের শিকড় ভূমি আঁকড়ে ধরে, যা মাটির ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং উপকূলীয় অঞ্চল স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে।
7. কার্বন সঞ্চালন: ম্যানগ্রোভ বনগুলো বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশের সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের অন্যতম উদাহরণ।


0 Comments