বাংলাদেশের সংবিধান
বাংলাদেশের সংবিধান হল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। এটি ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর কার্যকর হয়, যা বাংলাদেশের আইন ও শাসনব্যবস্থার ভিত্তি। সংবিধানটি দেশের রাষ্ট্র পরিচালনার মূল কাঠামো ও নীতিমালা নির্ধারণ করে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্যের বিধানও এতে সন্নিবেশিত।
বাংলাদেশের সংবিধানের কিছু মূল দিক:
1. রাষ্ট্রের চরিত্র: সংবিধান অনুসারে, বাংলাদেশ একটি গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র। এখানে সার্বভৌমত্বের মালিক জনগণ।
2. রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় সংগীত: বাংলা ভাষা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা এবং জাতীয় সংগীত হল "আমার সোনার বাংলা", যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত।
3. নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা: বাংলাদেশে একটি সংসদীয় শাসনব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রপতি হলেন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা সরকার পরিচালনা করে।
4. মৌলিক অধিকার: সংবিধানে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে, যেমন সমানাধিকার, বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি।
5. নীতির মূলনীতি:
- জাতীয়তাবাদ
- সমাজতন্ত্র
- গণতন্ত্র
- ধর্মনিরপেক্ষতা
6. সংশোধন ক্ষমতা: সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংসদের হাতে রয়েছে। তবে এটি একটি কঠোর প্রক্রিয়া যা বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়।
কিছু উল্লেখযোগ্য সংশোধনী:
চতুর্থ সংশোধনী (১৯৭৫): এটি রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা চালু করে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কমিয়ে আনে।
পঞ্চদশ সংশোধনী (২০১১): তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়।
সংবিধান দেশের আইনের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা এর ভিত্তিতেই পরিচালিত হয়।

0 Comments