মহানবী হয়রত মুহুম্মদ (সাঃ) এর ইসলাম প্রচার

 মহানবী হয়রত মুহুম্মদ (সাঃ) এর ইসলাম প্রচার

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বশেষ নবী হিসেবে সমাদৃত। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের জন্য ইসলাম ধর্ম প্রেরণ করেন। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নবুয়তের জীবনকালকে প্রধানত তিনটি ধাপে ভাগ করা যেতে পারে: প্রথমে ইসলাম প্রচারের শুরুর সময়, পরে মদিনায় হিজরত, এবং সর্বশেষে ইসলামের ব্যাপক প্রচার ও প্রতিষ্ঠা।


১. ইসলাম প্রচারের শুরু (মক্কায়)

মহানবী মুহাম্মদ (সা.) ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। গুহা হেরা-তে ধ্যানের সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) তাঁর কাছে প্রথম ওহি নিয়ে আসেন, যা কুরআনের প্রথম আয়াত হিসেবে প্রেরিত হয়। প্রথমে নবী (সা.) গোপনে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। তার পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। বিশেষভাবে তার স্ত্রী খাদিজা (রাঃ), বন্ধু আবু বকর (রাঃ), এবং চাচাতো ভাই আলী (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন।


এরপর তিনি জনসমক্ষে ইসলামের শিক্ষা প্রচার শুরু করেন, যা মক্কার কুরাইশ নেতাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে। তারা ইসলামের শিক্ষা এবং নবীর প্রতি শত্রুতা প্রদর্শন করতে শুরু করে। মক্কার মুসলমানরা কঠিন নির্যাতনের শিকার হয়।

২. মদিনায় হিজরত

মক্কায় অত্যাচার বৃদ্ধি পাওয়ার পর মহানবী (সা.) এবং তার অনুসারীরা মদিনায় হিজরত করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। মদিনায় এসে নবী (সা.) প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তিনি মুসলমান, ইহুদি, এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের একটি চুক্তি করেন, যা মদিনা সনদ নামে পরিচিত।


৩. ইসলামের বিস্তৃতি

মদিনায় ইসলামের ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার পর মহানবী (সা.) ইসলামের দাওয়াত মক্কাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করেন। ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও তিনি ধৈর্য এবং কৌশলগত নেতৃত্ব দিয়ে ইসলামের প্রচার অব্যাহত রাখেন। ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে মক্কায় শান্তিপূর্ণভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়।


মহানবী (সা.)-এর ইসলামের শিক্ষা ছিল আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, মানবতার প্রতি দয়া, এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে আলোকিত করা।

Post a Comment

0 Comments